মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Monday, July 29, 2013

আল্লামা শফী'র 'তেতুল' তত্ব:বিরোধিতা এবং বাস্তবতা।


আল্লামা শফী নারীদেরকে তেতুলের সাথে তুলনা করেছেন। উপমাটা শ্রুতি মধুর নয়। অনেকটা অশোভন ও নগ্ন। অনেকের মতে অশালীন অথবা জঘন্য। ভদ্রজনের কাছে ব্যাপারটা খুবই বিব্রতকর। কিন্তু দেখার বিষয় হল কোন প্রসঙ্গে এবং কোন প্রেক্ষাপটে তিনি এই উক্তি করেছেন। দেশে যখন ইভটিজিং প্রতিরোধে আইন করেও তা রোধ করা যাচ্ছে না বরঙ দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতি বছর যৌন নির্যাতনের ঘটনা পূর্বের রেকর্ডকে ব্রেক করছে। আর এ ক্ষেত্রে নারীর অবাধ চলাফেরা আর অশালীন পোষাকই যে অনেকাংশে দায়ী তা সমাজ বিশ্লেষকরা স্বীকার করতে বাধ্য। নারীর নিরাপত্তার স্বার্থে পোষাক পরিচ্ছদে ধর্মীয় অনুশাষন আজ অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে। আমরা শফি সাহেবের ঐ বয়ান সরাসরি দেখিনি এবং পুরোপুরি শুনারও সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি, দেশের বর্তমান বাস্থবতায় নারীর নিরাপত্তা বিধান এবং বেহায়াপনা ও উলঙ্গপনা রোধকল্পেই তিনি এই বয়ান রেখেছেন। একটা বিষয় আমার কাছে বোধগম্য নয়। 'তেতুল' তত্বটা আমাদের কাছে জঘন্য অথচ 'ধর্ষন' শব্দটা আমাদের কাছে একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু বাস্থবতা হচ্ছে: তেতুল তত্বের মধ্যে যে অন্তর্নিহীত তাৎপর্য রয়েছে তারই রুঢ় বাস্থব প্রকাশ হচ্ছে 'ধর্ষন' 'ইভটিজিং' সহ অধিকাংশ সামাজিক অপরাধ। অনেকে শফি সাহেবের এই বক্তব্যকে বিকৃত মানসিকার পরিচায়ক বলে বিবৃতি দিয়েছেন। আমি বলি,
যারা এর বিরোধিতা করছেন তারাই বিকৃত মানসিকতা লালন করছেন। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য তেতুল তত্বটাই বাস্থব এবং স্বাভাবিক
বিষয়। সৃষ্ট জীবের সকল নারী পুরুষের মধ্যে এটাই প্রকৃতি। তার উল্টোটাই অস্বাভাবিক। কুত্তি দেখলে কুত্তা তার পেছন পেছন হাটে এটা রাস্থাঘাটের নিত্য নৈমিত্তিক দৃশ্য। বিরোধিতাকারীদের মধ্যে যারা পুরুষ তাদের ব্যাপারে আমার প্রশ্ন- নারীর জন্য কি তাদের মধ্যে কোন আকর্ষণ নেই? সৃষ্টিগত ভাবে নারী পুরুষের মানবিক প্রকৃতিতে যে অলংঙ্ঘনীয় টান স্রষ্টা দিয়েছেন তা কি তারা অনুভব করেন না? রাস্থা ঘাটের স্বল্প বসনা অর্ধ নগ্ন নারী কি কখনও তাদের মনে কোন রেখাপাত করে না? কোন প্রভাব সৃষ্টি করে না? যদি করে তবে আপনারা কিভাবে তেতুল তত্বকে অস্বীকার করেন? আর যদি না করে তবে আসলেই কি আপনারা সুস্থ দেহের স্বাভাবিক মানুষ? একজন সু্স্থ মানুষ যেহেতু নর নারীর এই প্রকৃতিকে অস্বীকার করতে পারেন না সে হিসেবে নির্দ্বিধায় বলা যায়- যারা বিরোধিতা করছেন তারাই মুলত অসুস্থতা এবং এ্যাভনরমালিটির শিকার। তারা ফিজিক্যালি অর মেনটালি আনষ্টেবল্। এবার আসি আমরা উপমা বা শব্দ প্রয়োগের বিষয়ে। শফি সাহেব যে ধরনের উপমা বা শব্দ প্রয়োগ করেছেন তা যে অনেকটা নগ্ন বা শ্রুতিকটু তা আমরা প্রথমেই স্বীকার করেছি। কিন্তু নারীদের ব্যাপারে এর চেয়েও কঠিন উক্তি বিভিন্ন বিখ্যাত মনিষি ও দার্শনিকরা করেছেন তা এই টুডে ব্লগেই বিভিন্ন পোষ্টে প্রকাশিত হয়েছে। সুতরাং আমরা সেগুলো আর উল্যেখ করার প্রয়োজন অনুভব করছি না। আমরা জানি রোগ যত কঠিন হয় তার ওষুধও তত হাই ডোজের হয়। দেহের অপারেশন করতে গিয়ে ডাক্তারদেরকে কত নির্দয় হতে হয় তা একমাত্র ডাক্তার আর ভোক্তভোগী রোগীরাই ভাল বলতে পারবেন। সমাজ এবং চারিত্রিক বিপর্যয়ের এই ক্রান্তিকালে সমাজ সভ্যতার নৈতিক ট্রিটমেন্টে এ ধরনের কঠিন ডোজের প্রয়োগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে। মানুষের বিবেক এবং ঘুমন্ত চেতনাকে জাগ্রত করার জন্য আল্লামা শফি সঠিক এবং বাস্তব সম্মত উদাহরণই দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তুচ্ছাতিতুচ্ছ বস্তুর উদারহন দিয়েছেন। মুশিরকরা এ জন্য উপহাস করত। আল্লাহ তায়ালা এর জবাবে আয়াত নাযিল করলেন- 'নিশ্চয় আল্লাহ মশা অথবা তার চাইতে উপরের কিছুর উপমা দিতেও লজ্জাবোধ করেন না। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তারা জানে যে, এটা নিশ্চয় প্রভুর কাছ থেকে সত্য। আর যারা অবিশ্বাসী তারা বলে যে-আল্লাহ এমন উপমা দ্বারা কি চান?' (সুরাহ বাক্বারা-২৬)এ ক্ষেত্রে আল্লামা আহমদ শফিও বাস্থবতার উপমা দিতে গিয়ে কোন লজ্জাবোধ করেননি।

No comments:

Post a Comment

Pages