মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Monday, July 9, 2018

হিন্দুত্ববাদে 'কামা' বা যৌনতাই যেন জীবনের একটি মুল লক্ষ্য


বিডি টুডে ব্লগ সাইটে সজল আহমেদের হিন্দু মন্দির আর গ্রন্থ ভরা যৌনতা আর অযাচার আরো অনেক কিছু! পোষ্টে প্রথমে আমার বিষয়টি নজরে পড়ে। ব্লগ থেকে রেফারেন্সসহ যে তথ্যগুলো পাই তাতে আমি বিস্মিত হই। ভাবলাম এগুলো কি আসলেই সত্যি? তবে ছবিগুলো দেখে প্রথমে আমি বিনোদনই পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, এগুলো ফটোশপের ফটোগ্রাফিই হবে হয়ত। কিন্তু যখন গুগল মামার কাছে গেলাম, 'Khajuraho mandir' লিখে ইমেজ সার্চ দিলাম, তখন আমি দারুন শক্ড হয়েছিলাম। এও কি সম্ভব! এটা কি ধর্ম মন্দির নাকি যৌন মন্দির? উপাসনালয় নাকি পর্ন ভিডিওগ্রাফির শুটিং সেট? 

সার্চ রিজাল্টে খাজুরাহো মন্দিরের অগনিত চিত্র সামনে ভেসে উঠলো। দুর থেকে মন্দিরের নান্দনিক নির্মান শৈলী দেখে ভালই লাগে। কিন্তু জুম করলে বেরিয়ে আসে মন্দির গাত্রের আসল চেহারা। দুর থেকে যেটা খাঁজ কাটা ডিজাইন বা নির্মান শৈলী মনে হয়, ওগুলো আসলে কোন ডিজাইন নয়। সবগুলো নারী পুরুষের একেকটা উলঙ্গ মুর্তি। বিশাল উচু মন্দিরের আগা গোড়ার প্রতিটি ভাঁজে এসব দৃশ্য। কোথাও নারী পুরুষ খুনসুটিরত, কোথাও বিভিন্ন এ্যাংগেলে কাম কার্যে ব্যাস্ত। যেন কামাসুত্রা! নারীকে দিয়ে মুখমৈথুন, হস্তমৈথুন কোনটাই বাদ নেই। এমন কি ঘোড়ার সাথে কামলীলায় ব্যস্ত দৃশ্যও রয়েছে। তবে সম্মিলিত যৌন লীলার দৃশ্যই সবচেয়ে বেশি।
এই যৌনতার কারনে এই মন্দিরকে বলা হয় 'টেম্পল অফ লাভ' অর্থাৎ 'ভালবাসার মন্দির'।

এই লিংকে প্রবেশ করলে খাজুরাহো মন্দিরের আরও অসংখ্য যৌন পোর্টরেইট ভিউ আপনার সামনে চলে আসবে।

(ভিডিও লিংক দিলাম। তবে ছবিগুলো কষ্ট করে গুগলে সার্চ দিয়ে দেখে নিবেন, চরম নোংরা হওয়ায় আপলোড করিনি)

পরে যখন সুত্রে পাওয়া হিন্দু ধর্মগ্রন্থের রেফারেন্সে দেব দেবীদের আকাম কুকাম আর কামলীলার বিষয় নিয়ে আরও ঘাটাঘাটি করলাম, তখন মন্দিরের দেয়ালে মুর্তিমান এসব নোংরামীকে তাদের ধর্মের জন্য স্বাভাবিক মনে হল। মনে হল, দেবদেবিদের সেসব ঐতিহাসিক! কর্মকান্ডকেই মন্দির গাত্রে বাস্তব রুপ দেয়া হয়েছে।

আরও মনে পড়ল, হিন্দু ধর্মের প্রায় সব দেব দেবীই নগ্ন, উলঙ্গ। মনে প্রশ্ন জাগে, যারা ধর্মপরায়ন হিন্দু, তারা যখন স্বপরিবারে নগ্নবক্ষা দেবীর পুঁজো দিতে যায়, একটুও কি লজ্জা করে না তাদের? মনে কি একবারও প্রশ্ন জাগে না, এদের উলঙ্গপনার ব্যাপারে?

আমার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, এটা হিন্দু ধর্মে ঢুকে পড়া নব্য কোন কু সংস্কার কি না? তাই মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপেডিয়াতে সার্চ দিলাম, জানলাম তার ইতিহাস।


জানলাম, এটা বর্তমানে UNESCO এর World Heritage Site, South Asia হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। ইন্ডিয়ার মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত খাজুরাহো মন্দির তৈরি হয়েছে ৯৫০ থেকে ১০৫০ খৃস্টাব্দের মধ্যে। ১২ শতাব্দি পর্যন্ত ওখানে বিভিন্ন দেব দেবীর নামে মোট ৮৫ টি মন্দির বিদ্যমান ছিল। যার বিস্তৃতি ছিল বিশ কি: মি: স্কয়ারের চেয়েও বেশি। এখন মাত্র ২০ টি মন্দির অবশিষ্ট আছে।

'Most Khajuraho temples were built between 950 and 1050 AD, during the Chandella dynasty. Historical records note that Khajuraho temple

site had 85 temples by 12th century, spread over 20 square kilometers. Of these, only about 20 temples have survived, spread over 6 square kilometers. Of the various surviving temples, the Kandariya is decorated with a profusion of sculptures with intricate details, symbolism and expressiveness of ancient Indian art.'

খাজুরাহো মন্দির মুলত দুটি স্কুলের জন্যই উৎসর্গিত ছিল, যেগুলোতে হিন্দু ও জৈন ধর্ম শিক্ষা দেয়া হত।

'The Khajuraho group of temples were built together but were dedicated to two schools of Hinduism and to Jainism-suggesting a tradition of acceptance and respect for diverse religious views among Hindus and Jains.'

প্রশ্ন হল, হিন্দু এবং জৈনরা এ দুটি স্কুলে কী শিখত? ধর্ম নাকি যৌনতা? দেখুন এখানে:

The art work symbolically highlight the four goals of life considered necessary and proper in Hinduism - dharma , kama , artha and moksh.

হিন্দুত্ববাদ অনুযায়ী জীবনের ৪টি গোলকেই খাজুরাহো মন্দিরের ডিজাইন শৈলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে 'কামা' বা যৌনতা।

অর্থাৎ, হিন্দুত্ববাদ অনুযায়ী যৌনতা হচ্ছে জীবনের একটি গোল বা লক্ষ্য। অথচ, যৌনতা জীবনের একটি অংশ হতে পারে; এটা কোনভাবেই সভ্য সমাজের জীবনের লক্ষ্য হতে পারে না।

যেহেতু হিন্দুত্ববাদ মতে 'কামা' জীবনের একটি গোল, তাই যৌনতা একটি অবাধ বিষয় হয়ে দাড়ায়। আর দেব দেবীরা এসবই করেছেন।

পড়ুন আমার অন্য পোষ্ট- দুর্গা, গনেষ, শিব, কৃষ্ণের অশ্লিলতা

No comments:

Post a Comment

Pages