ভাষা দিবস এলে দেশব্যাপি ভাষাপ্রেমের সুনামি বয়ে যায়। শহিদ মিনারে শহিদদের শ্র্রদ্ধা জানাতে ফুল দিয়ে কোটি টাকা বিসর্জন দেয়া হয়। বক্তৃতা বিবৃতি আর অনুষ্ঠান করে সীমাহীন টাকা ব্যায় করা হয়। এতে কি শহিদদের আত্বার কোন উপকার হয়? যারা শহিদ মিনারে ফুল দিতে প্রতিযোগিতা করেন তাদের কয়জন কায়মনোবাক্যে শহিদদের আত্বার প্রশান্তির জন্য প্রার্থনা করেন? কয়জন নেতা শহিদদের কবরের সামনে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করেন? রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা ফুল দিতে গিয়ে শহিদ পরিবারগুলোর কথা কি ভুলেও দুয়েকবার মনে করেন নাকি কখনো শহিদদের কবরগুলো কি অবস্থায় আছে সে খোজখবর নেন? অর্থহীন সংস্কৃতি চর্চার এ সময়ে এই কথাগুলো আসলে খুবই অবান্তর। তা না হলে মাতৃভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দেয়ার ৬১ বছরেও কেন ভাষা শহীদ আবদুস সালামের কবর চিহ্নিত হয়নি। ভাষা শহিদদের প্রতি মর্যাদাবোেধর প্রকাশ ঘটাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পুষ্পার্পন করে রাষ্ট্রীয় অর্থ খরচ করা হয় অথচ তাদের কবরের প্রতি কেন এত উদাসীনতা? আসলে শহিদদের প্রতি সম্মানের চেয়ে রাজনৈতিক ইমেজই এখানে বেশি কাজ করে বলে আমার মনে হয়। এ জন্যই আমরা দেখি সামনে থাকার এবং সাংবাদিকের ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি হওয়ার জন্য নেতাদের কি আপ্রান প্রচেষ্ঠা?
এটা দুঃখজনক হলেও নির্মম বাস্তব যে শহিদ সালামের কবর অদ্যাবধি চিহ্নিত এবং পাকাকরন হয়নি এবং এ জন্য তার পরিবার দারুন ক্ষুব্দ। দৈনিক বর্তমান এর প্রতিবেদক গতকাল শুক্রবার সালামের গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞার মাতুভূঞা ইউনিয়নের সালামনগরে গেলে তার ছোট ভাই সুবেদার (অব.) আবদুল করিমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা এ ব্যপারেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রতি বছর ২১ ফেব্র“য়ারি এলে প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সালামের বাড়িতে আসে। এরপর আর কেউ খোঁজখবর রাখেন না। তাছাড়া ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে সালামের কবরটি চিহ্নিত করে পাকাকরণের ব্যবস্থা করেননি কেউ। আবদুল করিম এ ব্যাপারে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানান।
No comments:
Post a Comment