মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Wednesday, August 22, 2018

কোরবানির গোশত বন্টনে তাক্বওয়ার পরিচয় দিন

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের মাঝে কুরবানির গোশতের বৃহদাংশ নিজেরা খাওয়ার জন্য ফ্রিজে রেখে দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এতে করে গরীবরা নিরাশ হতে হয়। যা আসলেই দুঃখজনক। আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্যই এই ত্যাগ এবং কুরবানী। আপনার উদ্দেশ্য যেন হয় আল্লাহ পাকের রেজামন্দি। আল্লাহ তা’লা আপনার কুরবানির পশুর রক্ত, গোশত কিছুই চান না। তিনি দেখেন আপনার তাক্বওয়া, আপনার নিয়ত।
 ------------------------------------
হাফিজ মাওঃ আবদুর রব
 ------------------------------------
এসেছে কুরবানির ঈদ। ধনীরা সাধ্যমত পশু কুরবানি করবেন। কোরবানীর গোশত নিজেরা ভক্ষন করার পাশাপাশি আত্মীয় স্বজন ও গরীব মিসকিনদের মাঝে বিলিয়ে দেবেন। কোরবানীর ঈদ এলে গরীবরা আশা রাখে যে, কুরবানির ঈদের উসিলায় অন্তত কিছু গোশত খাওয়া হবে। ধনী-গরীব মিলেই সমাজ। সমাজের অসংখ্য মানুষ অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের অভাবে দিনাতিপাত করছে। কিছু মানুষ এতটাই অভাবী যে, ভালো খাবার তো দূরের কথা দুই বেলা খাবারও যাদের জুটছে না। এসব পরিবারের মানুষগুলো ৫০০ টাকা দরে গোশত কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। ধনী ব্যাক্তিদের উপর সমাজের অংশিদার এসব গরীব মানুষের হক্ব রয়েছে। শরয়ী ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এদের খোজ নেয়া অত্যবশ্যক। যারা কোরবানি করেন তারা গোশত বন্টনে এসব মানুষদের ব্যাপারে সবিশেষ নজর রাখবেন।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের মাঝে কুরবানির গোশতের বৃহদাংশ নিজেরা খাওয়ার জন্য ফ্রিজে রেখে দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এতে করে গরীবরা নিরাশ হতে হয়। যা আসলেই দুঃখজনক। আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্যই এই ত্যাগ এবং কুরবানী। আপনার উদ্দেশ্য যেন হয় আল্লাহ পাকের রেজামন্দি। আল্লাহ তা’লা আপনার কুরবানির পশুর রক্ত, গোশত কিছুই চান না। তিনি দেখেন আপনার তাক্বওয়া, আপনার নিয়ত।

শরিয়তের দৃষ্টিতে কুরবানির গোশত তিন ভাগে বন্টন করা মুসতাহাব। একভাগ নিজের জন্য, একভাগ নিকটাত্বীয়দের জন্য যারা কোরবানীর সামর্থ্য রাখেন না, আর আরেকভাগ গরীবদের জন্য। তবে বিত্তবানরা যদি পরবর্তীতে খাওয়ার জন্য সংরক্ষণ না করে পুরোটাই গরীবের মাঝে বিলিয়ে দেন সেটা হবে তার জন্য উত্তম সাদাকাহ।

দেশে দরিদ্র সীমার নীচে বাস করা এই গরীব জনগোষ্ঠী সারা বছরে একটা দিনও গোশত কিনে খেতে সক্ষম হয় না। তারা আশায় থাকে কুরবানির ঈদ এলে খুশি করে দু টুকরো গোশত খাবে। কিন্তু যখন গরিবরা আপনার গেইটে এসে কড়া নাড়বে, তখন আপনি ফ্রিজ ভর্তি করে রেখে বলবেন, গোশত নাই শেষ হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে সে চলে যেতে হয়। আপনার মনে রাখা উচিৎ- এসব গরীব লোকগুলো বছরের একটি দিনও গোশত কিনে খেতে পারবে না; অথচ আমি চাইলেই কিনে খেতে পারি। আবার এমনও কিছু গরীব আছে যারা লজ্জা-শরমের কারণে হয়তো আপনার দরবারে আসবে না। তাদের ব্যাপারেও আপনাকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, সমাজের বঞ্চিত এসব গরিব মিসকিনদের মাঝে ত্যাগের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারলেই সত্যিকারার্থে আমাদের কোরবানীটা ত্যাগের উৎসবে পরিণত হবে।



লেখক ঃ শিক্ষক

No comments:

Post a Comment

Pages