ফেসবুকে আমার এক ভাই ক্ষুদে লেখক তার স্ট্যাটাসে এমনই এক ক্ষুদে স্ট্যাটাস লিখেছে। আরও লিখেছে- 'যারা এ কথা সহ্য করতে পারেন না তারা ১০০ হাত দুরে থাকুন।" সেখানে তর্ক বিতর্কটাও জমেছে বেশ । আমিও সেখানে একটি মন্তব্য করি। তবে এখন শুধু সে নয়, বাংলাদেশের অনেক আলেম উলামা জাকির নায়েককে নিয়ে বড় রকম বাড়াবাড়ি করছেন। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিধায় আমার মন্তব্যটি এখানে হুবহু পোষ্ট করে দিলাম।
এখানে অনেক জমে উঠেছে দেখছি! রাত এখন ১ টার কাছাকাছি। বিতর্ক এবং বিষয়বস্তু দেখে না লিখে পারছি না।
আমি শুধু বলতে চাই, অপরুপ চাঁদেরও কলন্ক আছে। পক্ষান্তরে আমরা তো দুষে গুনে মানুষ। একমাত্র নবী রাসুল ছাড়া কেউই অল পারফেক্ট তথা নির্দোষ নিস্পাপ নয়। জাকির নায়েকও একজন মানুষ। ফিরিস্তা কিংবা নবী রাসুল নন। উনি যা বলেন সেটা উনার ইজতিহাদ, ইসতে'দাদ। সুতরাং তার ইসতেদাদে বা বক্তব্যে ভুল থাকতেই পারে।
ইমাম আজম আবু হানিফা'র ইজতিহাদে নামাযের ক্বিরাত ফারসি ভাষায় পড়া জায়েজ ছিল। পরবর্তীতে তার মতকে তিনি রদ করেন। সে জন্য কি উনাকে শরিয়তের অপব্যাখ্যাকারী বলা যায়!
জাকির নায়েকের অনেক ভ্রান্তি আছে। মানুষ হিসেবে তিনি ভুলের উর্ধে নন। কিন্তু উনার মাধ্যমে সারা বিশ্বের অমুসলিরা সহ মানুষের এমন সব উচ্চ স্থরে দ্বীনের দাওয়াত পৌছাচ্ছে, যা সকল আলেম উলামার দ্বারা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশের আলিম উলামাতো সে পর্যন্ত যাওয়ার যোগ্যতাই রাখেন না। বাংলাদেশে কয়জন আলেম আছেন যারা খ্রিষ্টান পাদ্রি, হিন্দু পন্ডিত কিংবা ইহুদি রাব্বির সাথে তাদের ভাষায় ডিবেট করার যোগ্যতা রাখেন? তাদের ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান রাখেন?? ইসলামের সবচেয়ে নিকট অতীতের আসমানী ধর্ম গ্রন্থ ইঞ্জিলের জ্ঞান কয়জনের আছে? আমার মনে হয় একজনও পাওয়া যাবে না বাংলাদেশে। তো আমাদের আলেমরা যেখানে যেতে পারছেন না সেখানে উনার উসিলায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সহ পশ্চিমা বিশ্বের অগনিত মানুষ ইসলামের দিকে আসছে। উনার এত বড় অর্জনকে কোনভাবেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
আমাদের সমস্যা হল, মানুষের দুষগুলাকে খুজি, গুনগুলা দেখি না। গ্লাসে আধা গ্লাস পানি কম সেটা দেখি, কিন্তু আধা গ্লাস যে আছে সেটা দেখিনা।
পরিশেষে Esmail Ahmed Shaker কে বলতে চাই, দ্বিনের দাঈ হওয়ার জন্য প্রজ্ঞা, ধৈর্য, পরমত সহিষ্ণুতা ও গঠনমুলক সমালোচনা মেনে নেয়ার মত উদারতা ইত্যাদি বিষয় খুবই জরুরী। তুমি প্রথমেই ঘোষনা দিয়েছ, "১০০ হাত দুরে থাকুন" এটা দ্বিনের দাঈদের বৈশিষ্ঠ্য নয়। এখানে মন্তব্য করার জন্য কি কোন মুশরিক আসবে! যারা আসবে তারা সবাই-ই মুসলিম। মতান্তরের কারণে কোন মুসলমানকে দালাল, কাফের ইসলামের শত্রু ট্যাগ করা যায়? একজন মুসলিমকে মিথ্যা ইলযাম দেয়ার শাস্তি পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট উল্যেখ করা হয়েছে।
বলতেয়ার বলেছিলেন - "আপনার মতের সাথে আমার মতের মিল নাও থাকতে পারে, কিন্তু আপনার মতের স্বাধিনতা রক্ষায় আমি জীবন দিতে পারি"
আমাদের প্রধান চার ইমাম সহ সকল ইমামদের আভ্যন্তরিন সম্পর্ক এবং আন্তরিকতা এমনই ছিল। যদিও অনেক ক্ষেত্রে তাদের ইজতিহাদ সম্পুর্ন বিপরীতমুখী ছিল।
শেষ কথা, একজন মুসলিমের (হোক সে অতি সাধারন কেউ কিংবা আলিম কিংবা দাঈ) ভুল ধরিয়ে দেয়া জরুরী, তবে তাকে অনাখাঙ্খিত কোন বিশেষনে কলংকিত করা কোনভাবেই সমিচীন নয়। আল্লাহর কাছে কে গ্রহনযোগ্য আর কে বিতাড়িত সেটা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন।
No comments:
Post a Comment