মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Saturday, September 22, 2018

ক্বওমি সর্বোচ্চ সনদকে মাস্টার্সের মান: কিছু সমস্যা কিছু প্রস্তাব


জেনারেল লাইনের শিক্ষায় বোর্ড সার্টিফিকেটের একটা ধারাবাহিকতা আছে। যেমন - PSC, JSC, SSC ইত্যাদি সার্টিফিকেট। অর্থাৎ তাদের সিক্সে উঠতে ফাইভে পাস করতে হয়৷ দশম পর্যন্ত যেতে জেএসসিতে পাস করতে হয়৷ কলেজে যেতে দশমে পাস করতে হয়৷ এভাবে ভার্সিটি পর্যন্ত একটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়৷ এখন সেসব কওমী মাদরাসা যেখানে বাছবিচার ছাড়াই দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়িয়ে দেওয়া হয় সেখানে কী হবে? তারা কি মাস্টার্সের মান বিবেচনা করে পড়ালেখার আইনকানুন আরেকটু মজবুত করবে?
মাস্টার্সের মান সামান্য কথা নয়৷ এরাবিক ও ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্সের মান পেয়ে তুমিও যদি তাদের মতো الهيئة العليا للجامعة القومية মূল আরবীটা এ'রাব দিয়ে বা এ'রাব ছাড়াই শুদ্ধরূপে উচ্চারণ করতে না পারো, কিংবা বাংলাতেও শুদ্ধ উচ্চারণ করতে না পারো তাহলে তোমার ভবিষ্যৎ কী হবে তুমিই ভালো জানো৷ তখন তোমার সাথে তোমার বড়দের মানও ধুলোয় মিশে যাবে৷ সর্বোচ্চ মার্ক পাওয়া কিছু আলেম ছাড়া বাকিদের কী অবস্থা হবে সেটাও এখন বিবেচনার বিষয়৷
দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত তোমার ধারাবাহিক উত্তরণ কীভাবে হবে তোমাকেই ভাবতে হবে৷

জেনারেল লাইনের শিক্ষায় বোর্ড সার্টিফিকেটের একটা ধারাবাহিকতা আছে। যেমন - PSC, JSC, SSC ইত্যাদি সার্টিফিকেট। অর্থাৎ তাদের সিক্সে উঠতে ফাইভে পাস করতে হয়৷ দশম পর্যন্ত যেতে জেএসসিতে পাস করতে হয়৷ কলেজে যেতে দশমে পাস করতে হয়৷ এভাবে ভার্সিটি পর্যন্ত একটা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়৷ এখন সেসব কওমী মাদরাসা যেখানে বাছবিচার ছাড়াই দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পড়িয়ে দেওয়া হয় সেখানে কী হবে? তারা কি মাস্টার্সের মান বিবেচনা করে পড়ালেখার আইনকানুন আরেকটু মজবুত করবে?

বাংলাদেশের কওমী মাদরাসাগুলোতে সিলেবাসের দৈন্য চলছে বহুবছর ধরে৷ হাইআতুল উলয়ার অধীনে যে ছয় বোর্ডের নামোল্লেখ করা হয়েছে মিশকাত পর্যন্ত ছয় বোর্ড কি অভিন্ন সিলেবাসে পাঠদান করে? যদি না করে থাকে তাহলে সমস্ত কওমী মাদরাসার জন্যে একটি এক ও অভিন্ন সিলেবাস কখন প্রণীত হবে? চট্টগ্রামের বাইরে অনেক মাদরাসায় উর্দু মাধ্যম নিয়ে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্ব বর্তমান৷ ঢাকার মাদরাসাগুলোতে মানতিকের কিতাব নিয়ে সমস্যা বিদ্যমান৷

তেমনিভাবে আরবী সাহিত্যের কিতাব নিয়ে চলছে চরম সংকট৷
আরবী ইনশার উপর অহরহ কিতাব লেখা হচ্ছে৷ যার যা ইচ্ছা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে দিচ্ছে৷ আর বাংলা সাহিত্যের কথা আসলে তো চরম লজ্জা বোধ করি৷ এখনও কওমী মাদরাসা সমূহ বাংলা সাহিত্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ পাঠদানে চিন্তার দৈন্যে ভুগে৷ ছয় বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের বইগুলো একেতো অসম্পূর্ণ আবার অপর্যাপ্ত৷ এতদসত্ত্বেও কওমী মাদরাসার অল্পস্বল্প ছাত্র যারা বাংলা সাহিত্যে অগ্রসরমাণ তারাও অবজ্ঞা আর অবহেলার শিকার৷ এছাড়া পুরনো আলেম আর নতুন আলেমদের মধ্যে বাংলা নিয়ে চরম মতভেদ৷ সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখনও সিলেবাস নিয়ে চরম সংকটে আছি বললে একেবারেই অতিশয়োক্তি হবে না৷

মাস্টার্সের মানকে সামনে রেখে এ মুহূর্তে আমাদের কয়েকটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত বলে মনে করি৷
এক. উর্দু ও ফার্সী ভাষার ব্যাপারে একটি ঐকমত্যের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া৷ কতটুকু রাখতে পারি কীভাবে রাখতে পারি?
দুই. মানতিক তথা যুক্তি ও তর্কশাস্ত্রের কিতাব সিলেবাসে রাখা না রাখা বা কোন স্তর পর্যন্ত রাখা যেতে পারে সেই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছা৷
তিন. দরসে উর্দু বাংলার জগাখিচুড়ি পাঠদান হবে নাকি নির্দিষ্ট একটাকে বেছে নেওয়া হবে তা নির্ণয় করা৷
চার. আরবী সাহিত্য ও ইনশার জন্যে এক ও অভিন্ন কিতাব বাছাই করা, যা পর্যায়ক্রমে একটি ছাত্রকে উপযুক্ত করে তুলতে পারে৷
পাঁচ. সমস্ত মাদরাসায় শিশু শ্রেণী থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত এক ও অভিন্ন সিলেবাস প্রণয়নে দ্রুত এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা৷
ছয়. সমস্ত কওমী মাদরাসাকে বোর্ডের অধীনে নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করা৷
সাত. সমস্ত কওমী মাদরাসার অভ্যন্তরীণ সার্বিক আইনকানুন অভিন্ন হওয়া৷
আট. স্বেচ্ছাচারী পরিচালকদের স্বেচ্ছাচারিতার পথ বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা৷
নয়. ঢালাওভাবে যে কেউ ইচ্ছেমতো দাওরায়ে হাদীস যাতে না খুলতে পারে তার জন্যে সুব্যবস্থা গ্রহণ করা৷
দশ. জাতীয়ভাবে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা৷
-----------------------
তাহসিনুল হক এর ফেসবুক পোস্ট থেকে।

No comments:

Post a Comment

Pages