মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Friday, November 23, 2018

বিদেশে উচ্চশিক্ষার নামে প্রতারিত হচ্ছি নাতো আমরা!

বিদেশে পড়াশোনা
আমরা বাঙ্গালীরা যাই পাই তার গোষ্টী উদ্ধার না করে শান্ত হইনা!
আজকাল যে দিকেই যাই সেদিকেই দেখি বিদেশে পড়াশোনার বিজ্ঞাপন, বিজ্ঞাপন না আমার লেখা উচিত ছিলো লোভনীয় বিজ্ঞাপন! অবাস্তব লোভনীয় বিজ্ঞাপনের ফাদে পড়ে অনেকেই হারাচ্ছে সর্বস্ব!!!

আসুন জেনে নিই বিদেশে পড়ার নেপথ্যেঃ
কারা বিদেশে পড়ার জন্য আবেদন করতে পারবেনঃ আপনাকে বিদেশে পড়াশোনা করতে অবশ্যই স্বীকৃত স্কুল- কলেজ মাদ্রাসার স্টুডেন্ট হতে হবে। আপনি যদি ফ্রেশম্যান হোন যেমন গতবছর বা এইবছর বাংলাদেশ পাবলিক পরীক্ষায় পাস করে একটি বৈধ সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন এবং এখন চাচ্ছেন পরবর্তী ডিগ্রী বিদেশ থেকে নিতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি বিদেশে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। অন্যথায় দেখা গেল আপনি এইচএসসি দিয়েছেন ৪-৫ পূর্বে তারপর পড়ালেখার সাথে কোন সম্পর্ক নেই হঠাত করে বিদেশে পড়াশোনা কন্টিনিউ করতে চাচ্ছেন তাহলে বিদেশে পড়তে যাওয়া আপনার জন্য নয়? এতে করে যে দেশে যেতে চাচ্ছেন সে দেশের এম্বাসেডর বুঝে যাবে আপনি স্টাডি নয় বিদেশ যেতে চাচ্ছেন অন্য কোন উদ্দেশ্যে!! অথবা আপনি যদি তাদেরকে আপনার স্ট্যাডি গ্যাপের উপযুক্ত কারণ দর্শাতে পারেন হয়তোবা সুযোগ পেতে ও পারেন তবে তার সম্ভাবনা খুব কম!


এবার আসি বিদেশে পড়াশোনার জন্য আপনার কি কি যোগ্যতা প্রয়োজনঃ
বিদেশে পড়াশোনার জন্য আপনার ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজের ওপর ভালো ধারণা থাকতে হবে এবং প্রসঙ্গত ক্ষেত্রে ইংলিশ প্রফিসিয়ান্সি সার্টিফিকেট দেখাতে হবে যেমনঃ IELTS, TOEFL, SAT, GRE ইত্যাদি
কারণ আপনি বিদেশে যে পড়ালেখা করবেন তা সম্পূর্ণ ইংলিশে পড়ানো হবে এবং যেদেশে থাকবেন সেদেশের ভাষা  সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই তাই ইংলিশই আপনার ভরসা। সেকারণে ইংলিশ জানা না থাকলে বিদেশে পড়ালেখা করে উন্নতিতো করতে পারবেনই না উল্টো বিপদের সমুক্ষীণ হতে হবে।

তারপর আসি রেজাল্টের ব্যাপারে আপনি সর্বশেষ যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তার গ্রেড যে বিশ্ববিদ্যালয়ে  ভর্তি হবেন তার সমমান কিনা কিংবা বাংলাদেশী সার্টিফিকেট তারা গ্রহণ করে কি না তা জেনে নিবেন এবং আপনি যে সাব্জেক্টে পড়তে চান সেটা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি না থাকলে টিউশন ফি কতো এবং স্কলারশিপ সুবিধা আছে কিনা??
এবার আসি এসব তথ্য জানবেন কি করে আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান কিংবা যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তা লেখে ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন সেখানে ইন্টারন্যাশনাল এডমিশনের বিস্তারিত ও এডমিশন রিকুয়ারমেন্ট গুলো দেওয়া থাকে সেখান থেকে আপনার দরকারী তথ্যগুলো জেনে নিবেন এবং কিছু না বুঝলে বা কিছু জানার থাকলে আপনি তাদের সাথে ইমেলে যোগাযোগ করতে পারেন ওরা তাদের ওয়ার্কিং ডে তে আপনার ইমেলের রিপ্লে দিবে।

এবার আসি ভর্তি আবেদন কিভাবে করবেনঃ
বিদেশে যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এডমিশন প্রসেস জানা থাকলে নিজে নিজেই অনলাইনে আবেদন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান  সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি ফর্ম দিয়ে থাকে নির্দিষ্ট তথ্য ও ডকুমেন্ট দিয়ে আপনি ফর্মটি সম্পন্ন করতে পারবেন এক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে এডমিশন ফি পেমেন্ট করতে হয় এবং সেটা ৫০-১৫০ ডলারের ভিতরে।
একেকটা ভার্সিটির এডমিশন প্রসেস একেক রকম হয় যেমন কিছু কিছু ভার্সিটিতে আপনার একাডেমিক সার্টিফিকেট গুলো স্ক্যান করে তাদের এপ্লিকেশন ফর্ম বা ইমেল-ফ্যাক্সে পাঠিয়ে দিয়ে প্রাথমিক ভর্তি নিশ্চিত করা যায় আবার কিছু  কিছু ভার্সিটিতে আপনার ডকুমেন্ট গুলো কুরিয়ার করে ভার্সিটির নির্দিষ্ট ঠিকানায় দিয়ে দিতে হবে ডকুমেন্ট হাতে পাওয়ার পর এগুলো যাচাই বাছাই করে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিবে।
আপনি প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত হবার পর আপনার ভর্তি নিশ্চিত করতে ভার্সিটি ব্যাংক একাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ডিপোজিট করতে হবে ডিপোজিট কৃত টাকা বুঝে পাবার পর তারা আপনাকে অফিশিয়াল অফার লেটার পাঠিয়ে দিবে এবং সেটা সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো সংগ্রহ করে নিকটস্থ এম্বাসিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। কোন কারণে আপনি ভিসা পেতে ব্যর্থ হলে ডিপোজিট কৃত টিউশন ফি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্টে ফেরত পাঠাবে তবে এরজন্য আপনাকে তাদের সাথে কন্টাক্ট করে নিতে হবে এবং ভিসা রিফিউজাল লেটার পাঠাতে হবে।

বিদেশে পড়াশোনার জন্য কেন এজেন্সী নির্ভর হয়া যাবেনাঃ
এজেন্সী গুলো বিদেশে পড়াশোনার জন্য জন্য বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে থাকে যেমন ভিসা পরে টাকা নো ভিসা নো পেমেন্ট! এটা সম্পুর্ণ ভূয়া এপ্লিকেশন ফাইল ওপেন করতে একটা ফি প্রয়োজন হয় ভিসা না হলে ওরা কি তাদের পকেট থেকে তা দিবে? দিবেনা অনেক সময় দেখা যায় ফাইল প্রসেসে ব্যর্থ হলে ফেক অফার লেটার ও ভিসা দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিবে কিংবা আপনার পাসপোর্ট ও অন্যান্য ডকুমেন্ট আটকিয়ে রাখবে!! এটা কিন্তু আমার নিজস্ব অভিমত সবার ক্ষেত্রে এমন নাও ঘটতে পারে এবং সব এজেন্সী ও কিন্তু সমান না, এজেন্সীর মধ্যেও ভালো খারাপ রয়েছে।

মনে রাখবেন এজেন্সী ভিসা দেয়না শুধুমাত্র আপনার ফাইল প্রসেসিং করে মাত্র, ভিসার জন্য এম্বাসী ফেস, ইন্টারভিউ আপনাকেই দিতে হবে।
ভবিষ্যৎ আপনার সুতরাং যে ভার্সিটিতে পড়তে চান যে কোর্সে ভর্তি চান সেটা আগে জেনে নিবেন তাছাড়া বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্য যদি হয় অর্থ উপার্জন তাহলে জেনে নিবেন যে দেশে পড়তে যাচ্ছেন সেখানে জব পারমিট আছে কিনা।
যারা করবেন একটু জেনে বুঝে করবেন তাহলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকবেনা, অন্যথায় বিদেশ গিয়ে নিজের বিপদ ঢেকে আনবেন না।

ধন্যবাদ কোন ভূল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেসেজ করতে পারেন ফেসবুকে

No comments:

Post a Comment

Pages