মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Sunday, November 25, 2018

১৭ মিনিটে বাবরি ভেঙেছি’এবার টার্গেট দিল্লি মসজিদ

‘১৭ মিনিটে বাবরি ভেঙেছি’এবার টার্গেট দিল্লি মসজিদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম
দিল্লির জামে মসজিদ ধ্বংস করার ডাক দিয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের উন্নাও-র বিজেপি দলীয় এমপি সাক্ষী মহারাজ। তিনি বলেছেন, দিল্লীর জামে মসজিদ ভেঙে ফেলা হোক। মসজিদের সিঁড়ির নিচ থেকে যদি বিগ্রহ না মেলে তবে তাকে ফাঁসি দেওয়া হোক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিকে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘১৭ মিনিটে বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলাম। আইন তৈরি করতে কত সময় লাগে?
সারা ভারত জুড়ে যখন বিজেপির হিন্দুত্ববাদী জোয়ারে বিভিন্ন মুসলিম ঐতিহ্যবাহী স্থান ও রাস্তার নাম পরিবর্তনের হিড়িক পড়েছে, সে সময় বিজেপির এমপি সাক্ষী মহারাজ দিল্লি জামে মসজিদ ভাঙার দাবি তুলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন।
বিবৃতিতে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন সচ্চিদানন্দ হরি সাক্ষী বা সাক্ষী মহারাজ। তিনি বলেন, রাজনীতিতে আসার পর এটিই ছিল তাঁর প্রথম বিবৃতি এবং তিনি এ ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তে স্থির থাকছেন।
তিনি বলেন, আমি প্রথম রাজনীতিতে আসার পর মথুরায় বলেছিলাম, অযোধ্যা, মথুরা, কাশীর দরকার নেই, দিল্লির জামা মসজিদ ভাঙো। সিঁড়িতে যদি বিগ্রহ না মেলে তাহলে আমাকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিও। সে বক্তব্যে আমি অবিচল রয়েছি।
সাক্ষী মহারাজের দাবি, মুঘল আমলে হিন্দুদের ভাবাবেগ নিয়ে খেলা করা হয়েছে, সারা ভারতে বহু মন্দির ভেঙে ৩০০০-এর বেশি মসজিদ গড়া হয়েছে।
বিবৃতিতে একই সঙ্গে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়ার জন্য সরকার আইন আনবে এমন প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ
বিজেপি-র এই এমপির দাবি, তাঁর দল অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণ নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। এ ব্যাপারে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, বিএসপি-র শীর্ষ নেত্রী মায়াবতী এবং সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদবকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেছেন সাক্ষী মহারাজ।
এদিকে আরেক বিজেপি এমপি রবিন্দ্র কুশাওয়া দাবি করেছেন যে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের াপথ পরিষ্কার করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশনে প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাজ্য সভায় যদি বএ বিল পাশ না হয় তাহলে একটি অর্ডিন্যান্স আনা হবে। 
অযোধ্যায় এখন শিবসেনা আর গেরুয়া বাহিনীর ‘যুদ্ধ-প্রস্তুতি’!!
হঠাৎ করেই যেন পালটে গেছে স্লোগানটা। ‘মন্দির ওহি বানায়েঙ্গে’ থেকে এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে, ‘মন্দির জলদি বানায়েঙ্গে’। আর এই মন্দির রাজনীতির কর্তৃত্ব এখন বিজেপির কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা। সেজন্য তাঁরা রীতিমতো বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হাতে হাত মেলাচ্ছে। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে, শিবসেনা আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শনি ও রোববার পরপর দু’দিনের কর্মসূচি নিয়ে আতঙ্কে কাঁপছে গোটা অযোধ্যা। ইতিমধ্যেই গোটা এলাকা জুড়ে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। মন্দির রাজনীতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক যোগী আদিত্যনাথও এ নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তায়।
মুখপত্রে শিবসেনা লিখেছে, ‘রাম এখনও বনবাসে আর সরকার (কেন্দ্র) রয়েছে সুদীর্ঘ নিদ্রায়।’ তারই বিরোধিতায় গতকাল ‘রামজন্মভূমি’তে এসে পৌঁছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও আদিত্য ঠাকরে। ট্রেনে করে অযোধ্যা এসেছেন কাতারে কাতারে শিবসেনা সমর্থক। সব দেখে মনে হচ্ছে, রামমন্দির নির্মাণ এখন দেশের প্রধানতম ইস্যু। পিছিয়ে নেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদও। আজ রোববার সেখানেই লাখ লাখ সাধুসন্তদের নিয়ে ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজন করেছে ভিএইচপি। তাদের দাবি, ’৯২-এর পর এত বড় মাপের ধর্ম সংসদ আর হয়নি অযোধ্যায়। ইতিমধ্যেই ভিএইপি-র শীর্ষ মহল থেকে জানানো হয়েছে, রোববারের আয়োজন যুদ্ধের আগে শেষ প্রস্তুতি। এর পরের লক্ষ্যই হবে বিতর্কিত ওই জমিতে রামমন্দির নির্মাণ।
তবে বিজেপির মাথাব্যথা অবশ্য বেশি শিবসেনাকে নিয়েই। রামের জন্মভূমিতে শনিবার প্রার্থনা করেন উদ্ধব। আরতি করেন সরযূ নদীর তীরে। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দা, সাধুসন্তদের সঙ্গে। এমনকি পুণের শিবনেরি দুর্গ থেকে মাটি নিয়ে অযোধ্যায় এসেছেন উদ্ধব। রামের মূর্তি নির্মাণের জন্য সেই মাটি তিনি তুলে দেন সাধুসন্তদের হাতে।
আর এই পরিস্থিতিতেই যেন বাবরি ধ্বংসের সেই দিন ফিরে আসছে এলাকার বাসিন্দাদের স্মৃতিতে। দুদিনের দুই কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ যোগী আদিত্যনাথের কাছে। ইতিমধ্যেই অযোধ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে ৪২ কোম্পানি প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি), ৫ কোম্পানি র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র‌্যাফ), ৭০০ কনস্টেবল ও ১৬০ জন পুলিশ ইন্সúেক্টর। সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়্যাড (এটিএস)-এর কম্যান্ডো বাহিনী। নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে প্রচুর ড্রোন ক্যামেরাও।
নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘১৭ মিনিটে বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলাম। আইন তৈরি করতে কত সময় লাগে?’ আপাতত যেন প্রহর গোনা চলছে রামজন্মভূমিতে। 
খবর: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

No comments:

Post a Comment

Pages