মুক্তকন্ঠ - Mukthokonto

স্বাধিন কন্ঠের মুক্ত প্রতিধ্বনি
ব্লগ এডমিন: সেলিম সামীর

Breaking

Saturday, July 7, 2018

মুসাফির নারী বা শহরে বন্দরে বের হওয়া নারীদের নামাযের দায়ভার কে নেবে?

সারা বছরের কথা না হয় বাদই দিলাম। ঈদের শপিংয়ে অনেক দুর দুরান্ত থেকে লোকজন শহরে আসেন। তাদের মধ্যে প্রচুর নারীও আসেন অভিভাবকের সাথে কিংবা স্বামীর সাথে। এদের মধ্যে ধর্ম কর্ম যারা করে না তাদের ব্যাপারে কোন কথা নেই। কিন্তু যারা দ্বীনদার, পরহেযগার, যারা পর্দার বিধান মেনে অভিভাবকদের সাথে কেনাকাটা করতে আসেন, তাদের শংপিংকালীন নামাযের যে ওয়াক্তগুলো আসে, চাইলেও সেই নামাজগুলো তারা পড়তে পারেন না। পুরুষরা কাছের কোন মসজিদ বা মার্কেটের মসজিদে পড়ে নিতে পারে কিন্তু নারীরা বসে বসে আফসুস করতে হয়। কারন আমরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের জন্য মসজিদের দোয়ার বন্ধ করে রেখেছি। কারন হিসেবে আমরা ফিৎনার দোহাই দেই। 

সিলেট সিটি সেন্টারের একটি অফিসে আমি ৫ বছর চাকুরী করেছি। মার্কেটের ৮ম তলায় বিশাল মসজিদে নারীদের জন্য আলাদা ব্যাবস্থাপনা আছে। পেশাজিবী প্রচুর নারি সেখানে এসে নামাজ পড়েন। কিন্তু কই! কোনদিন তো সেখানে ফিতনা হতে দেখিনি? 

এখন প্রশ্ন হল, এলাকায়-পাড়ায় নারীদের জন্য মসজিদের দোয়ার রুদ্ধ করে দিয়েছেন সেটা মেনে নিলাম, তারা না হয় ঘরে পড়ে নিচ্ছে। কিন্তু শপিংয়ে আসা, চিকিৎসায় আসা, এবং আরও বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনে আসা এসব নারীদের কাযা নামাযের দায়ভার কে নেবে? যারা ধর্মীয় জীবনের এই সিস্টেমটাকে তৈরী করেছেন তারা নেবেন? এখানে হয়ত তারা বলবেন নারীরা মার্কেটে, শহরে আসেন কেন? আমি পাল্টা প্রশ্ন করব, নারীরা যদি পর্দার বিধান মেনে এবং ইজ্জত আব্রুর নিরাপত্তা এনসিইউর করে মুহাররিমাতদের সাথে শহরে বন্দরে আসে তাদেরকে আপনি বাধা দিবেন কোন ফতোয়া দিয়ে? কোরআন হাদিস থেকে এমন কোন নির্দেশনা দেখানো যাবে??

বিতর্কিত লেখিকা নাস্তিক তাসলিমা নাসরিন বলেছে- "আমাদের সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক, পুরুষরা তাদের প্রয়োজন মতই সমাজটাকে সাজিয়েছে। নারীদের প্রয়োজন বা চাহিদার দিকে নজর দেয়নি।" 

আমি বরং আরেকটু আগে বেড়ে বলব, শুধু সমাজ জীবন নয় আমাদের ধর্মীয় জীবনটাকে ও আমরা পুরুষতান্ত্রিক ভাবেই সাজিয়েছি। ধর্ম পালনের আনুষ্ঠানিকতা এবং রীতিনীতি কে আমরা পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। ধর্মীয় গবেষনা, রীতি নীতি কিংবা ধর্মের সিস্টেমগুলোকে সমাজে পরিপালনের রুপরেখা তৈরিতে নারীদের কথা আমাদের মনে থাকে না; নারীদের অস্তিত্বটাই আমরা ভুলে যাই। অথচ নামাজ সহ ধর্মীয় বিভিন্ন আরকান জীবনে প্রতিষ্ঠা ও পরিপালন নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই কোরআন কর্তৃক আদিষ্ট। 

পরিষেশে একটাই প্রশ্ন, পরিবর্তিত বিশ্বায়ন এবং আধুনিক সমাজ ব্যাবস্থার এ যুগে ধার্মিক মুসলিম নারীরা ঘরের বাইরে গেলে তাদের নামায কায়েমের উপায় কি? এখনও কি ভাবার সময় হয়নি??

এ ব্যাপারে যাদের ভাবা উচিত তারা কি একটু ভাববেন!

No comments:

Post a Comment

Pages